ফল ঘোষণার সাথে সাথে জোর ধাক্কা খেলো জোড়া ফুল শিবির। অপ্রত্যাশিতভাবে ১৮ টি আসনে পদ্ম ফুটিয়ে তৃণমূল শিবিরকে হিমশিম খাইয়েছে বলাই বাহুল্য।মোদী magic না কি অন্য কিছু কি ছিলো তাদেই এই এত ভালো ফলাফল করার কারন!
বিজেপির এই সাফল্যের পিছনে কি কারন কাজ করছে তা দেখে নেওয়া যাক-
প্রথমত : রাজ্যে ভোটের মেরুকরণে সম্পূর্ণ ফায়দা লুটেছে গেরুয়া শিবির। যে কারণে আগে তাদের ঝুলিতে থাকা ১৭ শতাংশ ভোট থেকে লাফিয়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০.০৩ শতাংশে। এরাজ্যে এর আগে বামেদের ভোট ছিল ২৭ শতাংশ, যার প্রায় ষোল আনাই গেছে বিজেপি শিবিরে।
দ্বিতীয়ত : বিশেষজ্ঞরা এই কারণটিকে সবথেকে বেশি গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার কারনে জনমত প্রকাশ করতে পারেনি সাধারণ মানুষ। ফলত, মানুষের মধ্যে প্রথম থেকেই একটা ক্ষোভ ছিল। তৃণমূল শিবিরও ভোটদান না হওয়ায় নিজেদের বাস্তব অবস্থান সম্পর্কে ঠাওর করতে পারেনি। মানুষ পঞ্চায়েত ভোট দিতে না পারায় এক প্রতিশোধ নিলো লোকসভায়।
তৃতীয়ত : তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের গোষ্ঠী কোন্দল বিজেপির হাত শক্ত করতে সুযোগ করে দিয়েছে। এমনকি স্থানীয় নেতাদের কাছ থেকে বিজেপির উত্থানের সঠিক খবর আসেনি তৃণমূলের সদর দপ্তরে।
চতুর্থত : নরেন্দ্র মোদির সব থেকে বড় সমালোচকও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন ভূ-ভারতে তাঁর থেকে জনপ্রিয় নেতা আর নেই। আর সেই নরেন্দ্র মোদী এবং সেনাপতি অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গকে পাখির চোখ করে নিয়েছিলেন অনেক আগেই। একের পর এক কেন্দ্রিয় নেতাদের সভা বাংলায় বিজেপি আসছে ত্বরান্বিত করে।
পঞ্চমত : বঙ্গের তপশিলি জাতি উপজাতি এবং মাতুয়াদের নিজেদের শিবিরে আনতে পেরে কামাল করেছে বিজেপি। যা দেখে চমকে গিয়েছে তৃণমূলও।
ষষ্ঠত : আবাস যোজনা সহ অন্যান্য বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল নেতাদের কাটমানি নেওয়ায় বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছিল সাধারণ মানুষ। তারই প্রতিফলন লোকসভা নির্বাচনের ভোটে।
সপ্তমত : বাম শাসনের প্রথমের বেশ কয়েকবছর দল সংগঠন নির্ভর থাকলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা প্রশাসন নির্ভর হয়ে পড়তে শুরু করেছিল। একটা সময় পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষই তৃণমূলের সংগঠনের কাজ দেখাশোনা করতে বলে, বলে থাকেন তৃণমূলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতারা। কিছু হলেই পুলিশের দ্বারস্থ, প্রশাসনিক নির্ভরতা বেড়ে গিয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। সংগঠনে তৈরি হয়েছে ফাঁকফোকর।
Comments
Post a Comment