●হিন্দ স্বরাজ-মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধী
মূল বিষয়বস্তুর কিছু অংশ তুলে ধরছি।
হিন্দ স্বরাজ ১৯০৯ সালের লেখা একটি সংক্ষিপ্ত গ্রন্থ যেখানে কথোপকথন হচ্ছে এক সম্পাদক এবং পাঠকের মধ্যে কুড়ি টি অধ্যায়ে বর্ণিত এই বইটিতে গান্ধীর আলোচ্য বিষয় গুলি ছিল পশ্চিমী সভ্যতার ভারতের ঔপনিবেশিক শাসন ভারতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতি এবং তার গুণাবলী তৎকালীন ভারতীয় জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট।।
হিন্দ স্বরাজ গ্রন্থের ঐতিহাসিক পটভূমি ছিল একদিকে নরমপন্থী জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে ভারতীয় জনসাধারণের প্রবল বৈপরীত্য অন্যদিকে ভারতীয় শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের পশ্চিমী সন্ত্রাসবাদি ভাবাদর্শের প্রতি আকর্ষণ নরমপন্থীরা ১৯০৭ সালের মধ্যে ভারতীয় রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়ে অথচ তারা চরমপন্থী তথা সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে কোন রাজনৈতিক আলাপ আলোচনায় বসতে চায় নি(অমলেশ ত্রিপাঠী-চরমপন্থি পর্ব)।।
ইংল্যান্ডে গিয়ে বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় গান্ধী ভারতের সন্ত্রাসবাদি যুবাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারে যে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের উপায় ব্যর্থতার কারণ।।
গান্ধী হিন্দ স্বরাজ গ্রন্থের প্রথমেই বলেছে যে ভারতীয়দের প্রয়োজন দেশীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অবহিত হওয়ার তা নিয়ে গর্বিত বোধ করা এবং পশ্চিমে সভ্যতার বিপরীতে একটি নতুন ধারার সভ্যতা কে গৌরবের আসনে বসানো।।
তিনি হিন্দ স্বরাজ গ্রন্থের বলেন ভারতীয় সভ্যতার উৎকৃষ্টতম নিদর্শন ভারতের গ্রাম গ্রামে জল যমানী ব্যবস্থা থাকার ফলে প্রত্যেক মানুষের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হয় এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে কোন মানুষ কর্মহীন হতে পারে না এর বিপরীতে উপনিবেশিক আধুনিক শহর যেখানে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক এবং যেখানে ট্রেডিশন না থাকার ফলে সমাজ ভঙ্গুর অপরাধী এবং লোভী হয়ে উঠেছে।।
হিন্দ স্বরাজ এ তিনি উপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদের কারণ হিসেবে পুঁজিবাদকে দায়ী করেন পুঁজিবাদ মানুষের শ্রম কে খাটো করে দেখে মানবতাবাদের পরিবর্তে যান্ত্রিকতা বাদ কে গুরুত্ব দেয় তিনি প্রযুক্তিকে মানবতাবাদের উপর স্থান দিতে চাননি গান্ধীজীর মতে প্রযুক্তি সবচেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর রূপ নেয় যখন এটি কেবল জড়বাদ কে সমর্থন করে গান্ধীজি প্রযুক্তি ব্যবহারের স্হিমিত পক্ষপাতী ছিলেন।।
হিন্দ স্বরাজ বইটিতে স্বরাজ ও স্বদেশ এবং সত্য শব্দ তিনটি অনেক বেশি অর্থপূর্ণ গান্ধীজী স্বরাজ শব্দটিকে দুটি অর্থে ব্যবহার করেছেন শেয়ার করুন self-government প্রথমটি আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং দ্বিতীয় টি স্বায়ত্তশাসন তবে তিনি সাহিত্য শাসন থেকে আত্মনিয়ন্ত্রণ কে অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন সমাজের ভিত্তি হিসেবে আত্মমর্যাদা আত্ম অনুভূতি আত্মবিশ্লেষণ কে গুরুত্ব দিয়েছেন অধিকার নয় এর সাথে কর্তব্য জড়িয়ে আছে সত্য ও ধর্মপ্রতিষ্ঠার উপর তিনি জোর দিয়েছেন গান্ধীজী স্বরাজ লাভ অন্যতম উপায় হিসেবে মনে করেন।
তার কাছে স্বরাজের অর্থ সকলের কাছে সামনে প্রসার স্বদেশী শব্দের মাধ্যমে তিনি সাম্য ও ঐক্যের আদর্শ প্রচার করেন স্বরাজের স্বরাজ অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে সত্যাগ্রহ তার কাছে প্রধান সত্যাগ্রহ হলো কোনো রাজনীতি নয় এটি একটি অভ্যাস এটি কোন রাজনৈতিক কৌশল নয় একদিকে হাতিয়ার অন্যদিকে উদ্দেশ্য সত্যাগ্রহের মাধ্যমে গভীরতম সত্যকে উপলব্ধি করা সহজ।।
Comments
Post a Comment